আইসিটি ২য় অধ্যায় কমিউনিকেশন সিস্টেমস ও নেটওয়ার্কিং এর জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর- HSC ICT

Date

Share With Your Friends

এই পেজে আলোচিত সকল গূরূত্বপূর্ন বিষয় সমূহঃ

ডেটা কমিউনিকেশন (Data Communication) কী?

কমিউনিকেশন শব্দটি Communicare শব্দ হতে এসেছে যার অর্থ to share (আদান-প্রদান/ বিনিময়) । যন্ত্র বা বিভিন্ন কমিউনিকেশন ডিভাইস ব্যবহার করে পরস্পরের মধ্যে নির্ভরযোগ্যভাবে ডেটা বা তথ্যের আদান-প্রদান হচ্ছে ডেটা কমিউনিকেশন (Data Communication)

Note: ডেটা কমিউনিকেশনের কার্যকারীতা মূলত তিনটি জিনিসের উপর নির্ভর করে।

১) ডেলিভেরি (Delivery)            ২) অ্যাকুরেসি (Accuracy)          ৩) টাইমলাইনস (Timeliness)

ডেটা ট্রান্সমিশন স্পিড বা ব্যান্ডউইথ (Bandwidth) কী?

প্রতি একক সময়ে বা প্রতি সেকেন্ডে যে পরিমাণ ডাটা এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে বা এক ডিভাইস থেকে অন্য ডিভাইসে স্থানান্তর করা হয়, তাকে ডাটা ট্রান্সমিশন স্পিড বলা হয়। এই ডাটা ট্রান্সমিশন স্পিডকে ব্যান্ডউইডথ বলা যেতে পারে। প্রতি সেকেন্ডে কত বিট ডেটা ট্রান্সফার হতে পারে তার উপর ভিত্তি করে ডেটা ট্রান্সমিশন স্পীড হিসাব করা হয় । অর্থাৎ ব্যান্ডউইথ একক হলো বিট পার সেকেন্ড (bps)

Note: ডেটা ট্রান্সমিশন স্পীডকে মূলত তিন ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে।

১) ন্যারো ব্যান্ড (Narrow Band)        ২) ভয়েস ব্যান্ড (Voice Band) ৩) ব্রডব্যান্ড (Broad Band)

Bandwidth Calculation:

Bit- 0,1

1Byte= 8 bit

1KB= 1024B

1MB=1024KB

1GB= 1024MB

1TB= 1024GB

Bandwidth Calculator

ন্যারোব্যান্ড (Narrow Band) কী?

যদি কোন নেটওয়ার্ক চ্যানেলের ডেটা ট্রান্সমিশন স্পীড 45bps হতে 300bps পর্যন্ত হয়ে থাকে তবে তাকে ন্যারোব্যান্ড (Narrow Band) বা সাব-ভয়েস (Sub-voice) ব্যান্ড বলা হয়। এই ব্যান্ড সাধারনত ধীরগতির ডেটা স্থানান্তরের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। টেলিগ্রাফ মেশিনে এই ট্রান্সমিশন স্পীড ব্যবহার করা হতো।

ভয়েসব্যান্ড (Voice Band) কী?

ভয়েস ব্যান্ডের ডেটা ট্রান্সমিশন স্প্রীড সাধারনত 9600bps বা 9.6kb পর্যত হয়ে থাকে। যদি কোন নেটওয়ার্ক চ্যানেলের ডেটা ট্রান্সমিশন স্পীড 300bps এর উপর হতে 9600bps পর্যন্ত হয়ে থাকে তবে তাকে ভয়েসব্যান্ড (Voice Band) বলা হয়। কম্পিউটার থেকে প্রিন্টারে অথবা Scanner থেকে কম্পিউটারে ডেটা আদান-প্রদানে ভয়েস ব্যান্ডের ব্যবহৃত হয়। Voice আদান-প্রদানে এটি বেশী ব্যবহৃত হয় বলে একে ভয়েস ব্যান্ড (Voice Band) বলে। টেলিফোন লাইনে ব্যবহৃত ডেটা ট্রান্সমিশন স্পীড ভয়েস ব্যান্ডের অন্যতম উদাহরণ।

ব্রডব্যান্ড (Broad Band) কী?

উচ্চগতিসম্পন্ন ডেটা ট্রান্সমিশন সিস্টেমকে ব্রডব্যান্ড(Broad Band) বলা হয়ে থাকে। উচ্চগতির ইন্টারনেট ব্যবস্থার ক্ষেত্রে ব্রডব্যান্ড এর ব্যবহার বর্তমানে সবথেকে বেশি। ব্রড ব্যান্ডের ডেটা ট্রান্সমিশন স্পিড কমপক্ষে ১ Mbps হতে ২৫Mbps পর্যন্ত হয়ে থাকে। সাধারণত কো-এক্সিয়াল ক্যাবল, স্যাটেলাইট, সাইবার লাইন (DSL-Digital Satellite Link), অপটিক্যাল ফাইবারে ডেটা স্থানান্তরে ব্রডব্যান্ড ব্যবহৃত হয়।

সিগনাল (signal) কী ?

সিগনাল বলতে সময়ের সাথে ভোল্টেজের পরিবর্তনকে বোঝানো হয়। যখন ভোল্টেজ শূন্য থাকে এবং সেখান থেকে বাড়তে বাড়তে উপরে উঠে তখন কিছু পরিবর্তন হয় এবং ভোল্টেজ কমার সাথে সাথে এটি নিচে নামতে থাকে। সময়ের সাথে ভোল্টেজের এই উঠা-নামাই হচ্ছে সিগনাল

Signal কে দুই ভাগে ভাগ করা যায়- ১। Analog Signal. ২। Digital Signal.

Signal waveform

Note: ডিজিটাল সিগনালের ওয়েভফর্মকে বলা হয় স্কয়ার ওয়েভ এবং এনালগ সিগনালের ওয়েভফর্মকে বলা হয় সাইন ওয়েভ। একটি ওয়েভের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন পয়েন্টের দূরত্বকে বলা হয় এমপ্লিচ্যুড বা বিস্তার। একটি সিগনাল এর এমপ্লিচ্যুড যত বেশি হবে সেই সিগনাল তত বেশি শক্তিশালী হবে। সিগনাল এর এই শক্তিকে মাপা হয় এম্পিয়ার হিসেবে।

Analog Signal or এনালগ সিগন্যালঃ সময়ের সাথে পরিবর্তনশীল বৈদ্যুতিক সিগন্যালকে এনালগ সিগন্যাল বলে। এনালগ সিগন্যালের অ্যামপ্লিচিউড সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন মানের মধ্যে যে কোন মান গ্রহণ করতে পারে।

Digital Signal or ডিজিটাল সিগন্যালঃ ডিজিটাল সিগন্যাল এমন একটি সিগন্যাল যা সাধারণত দুটি বা নির্দিষ্ট কয়েকটি ভোল্টেজ লেভেল নিয়ে গঠিত। ডিজিটাল সিগন্যালের ভোল্টেজ লেভেল দুটিকে ০ এবং ১ দ্বারা প্রকাশ করা হয়।

ডেটা ট্রান্সমিশন মেথড (Data transmission method) কী?

ডেটা কমিউনিকেশনে উৎস থেকে ডেটা গন্তব্যে পাঠানোর সময় একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে পাঠানো হয়ে থাকে। যে পদ্ধতিতে ডেটা উৎস থেকে গন্তব্যে বা এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে ট্রান্সমিট হয়ে থাকে তাকে ডেটা ট্রান্সমিশন মেথড (Data transmission method) বলে।

উৎস থেকে গন্তব্যে ডেটা দুটি পদ্ধতিতে ট্রান্সমিট হয়ে থাকে। ১. প্যারালাল ট্রান্সমিশন   ২. সিরিয়াল ট্রান্সমিশন

প্যারালাল ট্রান্সমিশন (Parallel transmission) কী? 

যে ট্রান্সমিশনে ডেটা প্যারালাল বা সমান্তরালভাবে আদান প্রদান হয় তাকে প্যারালাল ডেটা ট্রান্সমিশন বলে। এই পদ্ধতিতে ডেটা বিট ভিন্ন ভিন্ন লাইনের মধ্যে দিয়ে একই সাথে পাঠানো হয়ে থাকে ।

Note:  প্যারালাল ট্রান্সমিশনে ডেটা সাধারণত ৮ বিট, ১৬ বিট বা ৩২ বিট ইত্যাদি উপায়ে চলাচল করতে পারে।

 

সিরিয়াল ট্রান্সমিশন (Serial transmission)কী?

যে ট্রান্সমিশনে একটি মাত্র লাইন ব্যবহার করে ডেটা পর্যায়ক্রমে ১ বিট করে আদান প্রদান করা হয়ে থাকে তাকে সিরিয়াল ডেটা ট্রান্সমিশন বলে। এই পদ্ধতিতে একসাথে আট বিট ডেটা করে পাঠানো হয়ে থাকে। উৎস থেকে গন্তব্যের দূরত্ব বেশী হলে সধারনত এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

বিট সিনক্রোনাইজেশন (Bit synchronisation) কী?

সিরিয়াল ডেটা ট্রান্সমিশনে এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে ডেটা ট্রান্সমিশন হওয়ার সময় অবশ্যই দুই কম্পিউটারের মধ্যে এমন একটি সমন্বয় ব্যবস্থা থাকা দরকার যাতে সিগনাল বিটের শুরু ও শেষ বুঝতে পারে। বিটের শুরু ও শেষ বুঝতে না পারলে গ্রহীতা কম্পিউটার সেই সিগনাল থেকে ডেটা পুনরুদ্ধার করতে পারে না। সিরিয়াল ডেটা ট্রান্সমিশনে ডেটা ট্রান্সমিট করার সময় ডেটার বিট গুলোর মধ্যে যে সমন্বয় করা হয় তাকে বিট সিনক্রোনাইজেশন (Bit synchronisation) বলে।

Note: বিট সিনক্রোনাইজেশনের উপর ভিত্তি করে সিরিয়াল ডেটা ট্রান্সমিশনকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়।

১। অ্যাসিনক্রোনাস (Asynchronous) ডেটা ট্রান্সমিশন,

২। সিনক্রোনাস (synchronous) ডেটা ট্রান্সমিশন

৩। আইসোক্রনাস (Isnchronous) ডেটা ট্রান্সমিশন

অ্যাসিনক্রোনাস ডেটা ট্রান্সমিশন (Asynchronous Transmission) কী?

যে ডেটা ট্রান্সমিশন সিস্টেমে ডেটা প্রেরক হতে গ্রাহক কম্পিউটারে ক্যারেক্টার বাই ক্যারেক্টার ট্রন্সমিট হয় তাকে অ্যাসিনক্রোনাস ট্রান্সমিশন বলে । অ্যাসিনক্রোনাস ট্রান্সমিশনে প্রতিটি ক্যারেক্টার ট্রান্সমিট করার মধ্যবর্তী বিরতি সময় অসমান হয়ে থাকে। এই পদ্ধতিতে প্রতিটি ক্যারেক্টার এর 8 বিটের সাথে একটি স্টার্ট বিট এবং শেষে একটি বা দুটি স্টপ বিট যুক্ত করে প্রতিটি ক্যারেক্টার 10 অথবা 11 বিটের ডেটায় পরিণত করে তারপর ট্রন্সমিট করা হয়। কী-বোর্ড থেকে কম্পিউটারে কিংবা কম্পিউটার থেকে প্রিন্টারে ডেটা পাঠানোর জন্য এ পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়।

Note: কীবোর্ড হতে কম্পিউটারে, কম্পিউটার হতে প্রিন্টারে, কম্পিউটার হতে কার্ড রিডারে, কম্পিউটার হতে পাঞ্চকার্ড এ অ্যাসিনক্রোনাস ট্রান্সমিশন ব্যবহার করা হয়।

 asynchronous-data-transmission

সিনক্রোনাস ডেটা ট্রান্সমিশন (Asynchronous Transmission) কী?

যে ডেটা ট্রান্সমিশন সিস্টেমে ডেটাকে প্রথমে একটি প্রাইমারি স্টোরেজ ডিভাইস ব্যবহার করে সংরক্ষণ করে ডেটাকে ব্লক বা প্যাকেট আকারে ভাগ করে প্রতিবারে একটি করে ব্লক ট্রান্সমিট করা হয় তাকে সিনক্রোনাস ট্রান্সমিশন বলে। সিনক্রোনাস ট্রান্সমিশনে প্রতিটি ব্লক ট্রান্সমিট করার মধ্যবর্তী বিরতি সময় সব সময় সমান থাকে। প্রতিটি ব্লকের শুরুতে একটি হেডার ইনফরমেশন ও শেষে একটি ট্রেইলার ইনফরমেশন যুক্ত করা হয়। কম্পিউটার হতে কম্পিউটারে, কম্পিউটার বা একাধিক ডিভাইসে একই সাথে ডেটা ট্রান্সমিট করতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।

আইসোক্রনাস ডেটা ট্রান্সমিশন (Isnchronous Transmission) কী?

অ্যাসিনক্রোনাস ও সিনক্রোনাস ডেটা ট্রান্সমিশন এর সমন্বিত রুপ হলো আইসোক্রনাস ডেটা ট্রান্সমিশন, যাকে আবার সিনক্রোনাস ট্রান্সমিশনের উন্নত ভার্সনও বলা হয়ে থাকে। এই পদ্ধতিতে ডেটা  সুষম বিটরেটে ট্রান্সমিট হয়ে থাকে। এ পদ্ধতিতে প্রেরক হতে প্রাপকে অ্যাসিনক্রোনাস পদ্ধতির স্টার্ট ও স্টপ বিটের মাঝে ব্লক আকারে ডেটা স্থানান্তরিত হয়। এখানে দু’টি ব্লকের মধ্যে সময়ের পার্থক্য  একেবারে 0 (শূন্য) রাখার চেষ্টা করা হয়। রিয়েলটাইম অ্যাপ্লিকেশন বা মাল্টিমিডিয়া ( অডিও, ভিডিও, ইমেজ ইত্যাদি) ফাইল ট্রন্সমিট করার জন্য আইসোক্রনাস ট্রান্সমিশন ব্যবহার করা হয়।

ডেটা ট্রান্সমিশন মোড (Data Transmission Mode)  কী?

ডেটা ট্রান্সমিশনের সময় ডেটা উৎস থেকে উৎপন্ন হয়ে একটি নির্দিষ্ট দিকে প্রবাহিত হয়। উৎস থেকে গন্তব্যে ডেটা ট্রান্সফারের ক্ষেত্রে ডেটা প্রবাহের দিককে ডেটা ট্রান্সমিশন মোড (Data Transmission Mode) বলা হয়।

Note: ডেটা প্রবাহের দিকের উপর ভিত্তি করে ডেটা ট্রান্সমিশন মোডকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়।     

) সিমপ্লেক্স (Simplex)   ) হাফ ডুপ্লেক্স (Half- Duplex)  ) ফুল ডপ্লেক্স (Full-Duplex)

প্রাপকের সংখ্যা ও ডেটা গ্রহণের অধিকারের উপর ভিত্তি করে ডেটা ট্রান্সমিশন মোডকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়।

) ইউনিকাস্ট (Unicast)  ২) ব্রডকাস্ট (Broadcast)  ৩মাল্টিকাস্ট (Multicast)

 

ইউনিকাস্ট ডেটা ট্রান্সমিশন মোড (Unicast Mode) কী?

যে ট্রান্সমিশন পদ্ধতিতে একজন প্রেরক ও একজন গ্রাহক থাকে এবং এদের মধ্যে যে কমিউনিকেশন হয়ে থাকে তাকে ইউনিকাস্ট ডেটা ট্রান্সমিশন মোড বলে। ইউনিকাস্ট ডেটা ট্রান্সমিশন মোডে একটি মাত্র নোড থেকে কেবলমাত্র একটি নোডের মধ্যে ডেটা আদান-প্রদান করা হয়ে থাকে। এটি one-to-one বা পয়েন্ট টু পয়েন্ট মোড হিসেবেও পরিচিত। যেমন-ফ্যাক্স, টেলিফোন, মোবাইল ফোন, ওয়াকিটকি, একক এসএমএম ইত্যাদি।

ব্রডকাস্ট ডেটা ট্রান্সমিশন মোড (Broadcast Mode) কী?

যে ট্রান্সমিশন পদ্ধতিতে নেটওয়ার্কভুক্ত কোন নোড হতে ডেটা ট্রান্সমিট হলে ঐ নেটওয়ার্কভুক্ত সকল নোডই তা গ্রহণ করতে পারে তাকে ব্রডকাস্ট ডেটা ট্রান্সমিশন মোড বলে। এটি one-to-all মোড হিসেবেও পরিচিত। যেমন-টেলিভিশন ও রেডিও সম্প্রচার ইত্যাদি। ব্রডকাস্ট ট্রান্সমিশন শুধুমাত্র সিমপ্লেক্স হয়ে থাকে।

মাল্টিকাস্ট ডেটা ট্রান্সমিশন মোড (Multicast Mode) কী?

যে ট্রান্সমিশন পদ্ধতিতে নেটওয়ার্কভুক্ত কোন একটি নোড থেকে ডেটা প্রেরন করলে তা শুধুমাত্র নেটওয়ার্কের অধিনস্ত নির্দিষ্ট কিছু নোড সেটি গ্রহণ করতে পারে তাকে মাল্টিকাস্ট ডেটা ট্রান্সমিশন মোড বলে। যেমন- অডিও কনফারেন্স, ভিডিও কনফারেন্স, গ্রুপ SMS, MMS ইত্যাদি। মাল্টিকাস্ট হাফ-ডুপ্লেক্স ও ফুল-ডুপ্লেক্স হয়ে থাকে। একে 1-to-n ডেটা ট্রান্সমিশন মোড ও বলা হয়।

data-transmission-mode

সিমপ্লেক্স মোড (Simplex Mode) কী?

যে ডেটা ট্রান্সমিশন পদ্ধতিতে ডেটা শুধুমাত্র একদিক থেকে প্রেরণ করা যায় তাকে সিমপ্লেক্স ডেটা ট্রান্সমিশন মোড বলে। সিমপ্লেক্স ডেটা ট্রান্সমিশনে সিগন্যাল কেবল একদিকে প্রবাহিত হতে পারে অর্থাৎ এই পদ্ধতিতে প্রেরক প্রান্ত শুধু ডেটা প্রেরন করতে পারবে আর গ্রাহক প্রান্ত সেই ডেটা শুধু গ্রহন করতে পারবে। এই ট্রান্সমিশনে প্রেরক কখনোই গ্রাহক হিসেবে বা গ্রাহক কখনোই প্রেরক হিসেবে কাজ করবে না। তাই এই মোডকে one-way বা একমুখী ডেটা ট্রান্সমিশন মোড ও বলা হয়।  যেমন-কীবোর্ড, মনিটর, রেডিও, টেলিভিশন ইত্যাদি।

হাফ ডুপ্লেক্স মোড (Half-Duplex Modde) কী?

যে পদ্ধতিতে ডেটা উভয় দিক থেকে আদান-প্রদান করা যায়, কিন্তু তা একই সময়ে সম্ভব নয় তাকে হাফ-ডুপ্লেক্স ডেটা ট্রান্সমিশন মোড (Half-Duplex Modde) বলে। হাফ ডুপ্লেক্স ট্রান্সমিশনে ডেটা উভয় দিক থেকে প্রেরণের সুযোগ থাকে, কিন্তু সেটি একই সময়ে সম্ভব না। হাফডুপ্লেক্স মোডে যখন একটি ডিভাইস ডেটা প্রেরণ করে, তখন অন্যটিকে অপেক্ষা করতে হয়। এক প্রান্ত থেকে ডেটা পাঠানো হলে অপর প্রান্ত তা গ্রহন করার পর পুনরায় ডেটা প্রেরণ করতে পারবে এবং প্রথম প্রান্ত প্রেরণ করার পর তা গ্রহন করতে পারবে।   যেমন- ওয়াকিটকি, শ্রেণীকক্ষে পাঠদান, ইন্টারনেট ইত্যাদি।

ফুল ডুপ্লেক্স মোড (Full-Duplex Mode) কী?

যে পদ্ধতিতে একই সময়ে ডেটা উভয় দিক থেকে আদান-প্রদান করা যায়, তাকে ফুল-ডুপ্লেক্স মোড বলে। এটি একটি two-way কমিউনিকেশন মোড। এই পদ্ধতিতে প্রেরক ও গ্রাহক একই সাথে ডেটা প্রেরন ও গ্রহন দুটোই করতে পারবে। Full-Duplex মোডে একটি সিঙ্গেল লাইন ব্যবহার করে ট্রাফিক একই সময়ে উভয় দিকে প্রবাহিত হতে পারে। যেমন- ল্যান্ডফোন, মোবাইল ফোন ইত্যাদি।

এটেনুয়েশন (Attenuation) কী ?

নেটওয়ার্ক মিডিয়ার মধ্যে দিয়ে সিগন্যাল একটি নির্দিষ্ট দূরত্ব অতিক্রম করার পর আস্তে আস্তে দুর্বল হয়ে পড়ে। দূরত্ব অতিক্রমের সাথে সাথে সিগন্যাল দূর্বল হয়ে যাওয়ার এই স্বভাবকে বলা হয় এটেনুয়েশন(Attenuation)। যে মিডিয়ার এটেনুয়েশন যত কম সেটি তত ভালো ।

EMI কী?

একাধিক ইলেকট্রোম্যাকনেটিক সিগনাল পরস্পরের কাছাকাছি আসলে একটি সিগনাল আরেকটি সিগনালকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করে । একে ইলেকট্রোম্যাকনেটিক ইন্টারফেরেন্স বা EMI বলা হয়।

ক্রসটক (Crosstalk) কী?

তামার তার একটি আরেকটির কাছে থাকলে একটির সিগানাল আরেকটির সিগনালকে প্রভাবিত করে। একে ক্রসটক(Crosstalk)  বলে।

রোমিং (Roaming) কী?

মোবাইল সার্ভিস প্রোভাইডারের কাভারেজ এরিয়া সীমাবদ্ধ থাকে। কাভারেজ এরিয়ার এই সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে মোবাইল সার্ভিস প্রোভাইডাররা যে বিশেষ আন্তঃসংযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে তাকে রোমিং বলে। যে মোবাইলটি ব্যবহার করা হচ্ছে সেটির কভারেজ এরিয়ার বাইরে গিয়েও অনবরত ডেটা সার্ভিস পাওয়াকে রোমিং বলা হয়।

মডুলেশন (Moulation) কী?

ডিজিটাল সংকেতকে এনালগ সংকেতে পরিবর্তন করার প্রক্রিয়াকে মডুলেশন বলে। টেলিযোগাযোগের ক্ষেত্রে মডুলেশন (Modulation) বলতে কোন পর্যাবৃত্ত তরঙ্গকে ব্যবহার করে একটি তথ্য সংকেত প্রেরণের জন্য উক্ত তথ্য সংকেতটিকে বিভিন্ন ভাবে পরিবর্তন করার প্রক্রিয়াকে বোঝায়।

ক্রমাটিক ডিসপারশন (Chromatic Disperson) কী?

অপটিকাল ফাইবারের মধ্যে দিয়ে ডেটা আলোক তরঙ্গে রূপান্তরিত হয়ে তারপর ট্রাসমিট হয়ে থাকে। বিভিন্ন তরঙ্গের আলোক সংকেত একই ক্যাবলের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার সময় কিছু আলোক তরঙ্গ তাদের দিক পরিবর্তন করে এদিক সেদিক হয়ে গন্ডগোল সৃষ্টি করতে পারে । একেই ক্রমাটিক ডিসপারশন (Chromatic Disperson) বলে।

ইভসড্রপিং (Eavesdropping) কি?

ইভসড্রপিং বলতে সাধারনত কমিউনিকেশন সিস্টেমে অবৈধ্য ছেদ বোঝায়। এর ফলে যে কেউ বিনা অনুমতিতে কোন কমিউনিকেশন সিস্টেমে যুক্ত হয়ে সেটি ব্যবহার করতে পারে।

ইলেকট্রোম্যাগনেটিক স্পেকট্রাম কি?

ইলেকট্রোম্যাগনেটিক স্পেকট্রাম হলো বিভিন্ন ফ্রিকুয়েন্সির সমাহার।

রেডিও ওয়েভ (Radio Wave)কী ?

বেতার তরঙ্গ বা রেডিও তরঙ্গ এক প্রকারের তড়িৎ-চৌম্বকীয় বিকিরণ। 3 kHz  থেকে 300 GHz ইলেকট্রোম্যাগনেটিক স্পেকট্রাম হলো রেডিও ওয়েভ। সাধারণত 10 kHz থেকে 1 GHz ফ্রিকুয়েন্সি রেডিও ওয়েভের জন্য বেশি ব্যবহৃত হয়। এটি সর্বাপেক্ষা বৃহত্তম তরঙ্গদৈর্ঘ্য বিশিষ্ট তড়িৎ চৌম্বকীয় বিকিরণ যার তরঙ্গদৈর্ঘ্যের সীমা ১ মিলিমিটার থেকে ১০,০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তিত হয়। রেডিও ওয়েভের তরঙ্গ দৈর্ঘ্য অনেক বেশি হওয়ায় এটি কম শক্তি সম্পন্ন হয় এবং অকল্পনীয় দুরত্ব পাড়ি দিতে পারে।

Note: প্রাকৃতিক উপায়ে বেতার তরঙ্গ সৃষ্টি হয় সাধারণতঃ বজ্রপাত বা মহাজাগতিক বস্তু থেকে এবং কৃষ্ণবস্তু বিকিরণের অংশ হিসেবেও এ তরঙ্গ পাওয়া যায়। কৃত্রিমভাবে তৈরীকৃত বেতার তরঙ্গ মোবাইল টেলিযোগাযোগ, বেতার যোগাযোগ, সম্প্রচার, রাডার , কৃত্রিম উপগ্রহের সাথে যোগাযোগ সহ অসংখ্য কাজে ব্যবহৃত হয়।

মাইক্রোওয়েভ (Microwave) কী?

মাইক্রোওয়েভ (Microwave) হলো হাই-ফ্রিক্যুয়েন্সি রেডিও ওয়েভ। 300MHz হতে 300GHz ফ্রিকোয়েন্সির ইলেকট্রোম্যাগনেটিক স্পেকট্রামকে বলা হয় মাইক্রোওয়েভ। মাইক্রোওয়েভের তরঙ্গের তরঙ্গ দৈর্ঘ্য 1mm থেকে 1m পর্যন্ত হয়ে থাকে। মাইক্রোওয়েভ সিস্টেম মূলত দুটি ট্রান্সসিভার নিয়ে গঠিত। এর একটি সিগনাল ট্রান্সমিট করার কাজে এবং অন্যটি সিগনাল রিসিভ করার কাজে ব্যবহৃত হয়। মাইক্রোওয়েভ বাঁকা পথে চলতে পারে না। মাইক্রোওয়েভ সিস্টেমে ব্যবহৃত অ্যান্টেনা বড় কোন ভবন বা টাওয়ারের উপর বসানো হয় যাতে সিগনাল বাধাহীনভাবে বেশি দূরত্বে পাঠানো যায়।

Note: মাইক্রোওয়েভ দুই প্রকার। ১। টেরেস্ট্রিয়াল মাইক্রোওয়েভ (Terrestrial Microwave)     ২। স্যাটেলাইট (Satellite)

ইনফ্রারেড (Infrared) কী?

ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক স্পেকট্রামের ৩০০ গিগাহার্জ হতে ৪০০ টেরাহার্জ পর্যন্ত ফিকুয়েন্সিকে বলে ইনফ্রারেড ওয়েব বা অবলোহিত বিকিরণ রশ্মি। ইনফ্রারেডের তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের সীমা ১ মাইক্রোমিটার থেকে ১ মিলিমিটার পর্যন্ত বিস্তিত হয়ে থাকে। ইনফ্রারেড ওয়েভের তরঙ্গ দৈর্ঘ্য দৃশ্যমান আলোক তরঙ্গ দৈর্ঘ্য অপেক্ষা সামান্য বড়। এদের খালি চোখে দেখা যায় না। নিকটবর্তী দুটি ডিভাইসের মধ্যে যোগাযোগে ইনফ্রারেড  ব্যবহিত হয়।

Note: ইনফ্রারেড তরঙ্গ আবিষ্কার করেন উইলিয়াম হার্শেল

ওয়্যারলেস ইন্টারনেট আক্সেস পয়েন্ট (Wireless Intrnet Acess Point) কী?

জনবহুল কোনো স্থান যেমন- শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্যাম্পাস, হাসপাতাল, বাস স্টেশন, রেলস্টেশন, বিমানবন্দর, অফিস-আদালত ইত্যাদি স্থানসমূহে অথবা বাসা-বাড়িতেও ওয়্যারলেস ইন্টারনেট সংযোগের জন্য ওয়্যারলেস ইন্টারনেট অ্যাক্সেস পয়েন্ট ব্যবহৃত হয়। ওয়্যারলেস ইন্টারনেট অ্যাক্সেস পয়েন্ট ব্যবহার করে মোবাইল ফোন বা স্মার্ট ফোন, ট্যাব, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, নোটবুক, পিডিএ ইত্যাদি পোর্টেবল ডিভাইসে ওয়্যারলেস নেটওয়ার্ক অ্যাডাপ্টারের মাধ্যমে সহজে ইন্টারনেট সংযোগ প্রদান সম্ভব।

বর্তমানে দুই ধরনের ইন্টারনেট অ্যাকসেস পয়েন্ট বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে। ১) হটস্পট ২) মোবাইল নেটওয়ার্ক

হ্যান্ড অফ প্রসেস ( Handoff process) কী?

কল আবিচ্ছিন্ন রেখে এক বা একাধিক বেজ স্টেশন পরিবর্তন করার পদ্ধতিকে হ্যান্ড অফ প্রসেস Handoff process বলে।

হটস্পট (Hotspot) কী?

ন্টারনেট আক্সেস পয়েন্ট ব্যবহার করে যখন নির্দিষ্ট কোন স্থানে বিভিন্ন পোর্টেবল ডিভাইস গুলোর মধ্যে যখন ইন্টারনেট অ্যাক্সেস করা হয় তখন তাকে হটস্পট বলে। হটস্পট হলো এক ধরনের ওয়্যারলেস নেটওয়ার্ক, যা বিভিন্ন কমিউনিকেশন ডিভাইসে যেমন- মোবাইল, কম্পিউটার, পিডিএ, ট্যাব, নেটবুক, নোটবুক, বা ল্যাপটপ ইত্যাদিতে ইন্টারনেট সংযোগ সরবরাহ করে। বর্তমানে জনপ্রিয় তিনটি হটস্পট (hotspot) প্রযুক্তি হলো— Bluetooth, Wi-Fi, WiMAX

Bluetooth কী?

স্বল্প দূরত্বে ডেটা আদান-প্রদানের জন্য ব্যবহৃত একটি ওপেন ওয়ারলেস প্রটোকল নেটওয়ার্ক হচ্ছে Bluetooth। সাধারনত কাছাকাছি অবস্থিত দুই বা ততোধিক ডিভাইসের মধ্যে ডেটা আদান প্রদানের জন্য এটি ব্যবহার করা হয়। Bluetooth সাধারনত পারসোনাল এরিয়া নেটওয়ার্কে (PAN) কাজ করে। Bluetooth এর কার্যকরী পাল্লা হচ্ছে ১০ মিটার। তবে বিদ্যুৎ কোষের শক্তি বৃদ্ধি করে এর পাল্লা ১০০ মিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি করা যেতে পারে। Bluetooth এর স্ট্যান্ডার্ড হচ্ছে IEEE 802.15.1। এটি মূলত 2.4 GHz ফ্রিকুয়েন্সি ব্যান্ডে কাজ করে

Bluetooth-technology

Note: ১৯৯৪ সালে ডেটা ক্যাবলের বিকল্প হিসেবে টেলিকম জায়ান্ট এরিকসন কম্পানি সর্বপ্রথম Bluetooth টেকনোলজি আবিস্কার করে। দশম শতাব্দীতে রাজা Herald Bluetooth ডেনমার্ক ও নরওয়ের বিভিন্ন বিচ্ছিন্ন গোষ্টি ও সম্প্রদায়ের লোকদের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা করে সবাইকে একই রাজ্য ও রাজার অধীনে নিয়ে আসে। সেই ধারনার সাথে মিল রেখে ডেনমার্কের রাজা Herald Bluetooth এর নামানুসারে এই প্রযুক্তির নামকরন Bluetooth করা হয়েছে।

Wi-Fi কী?

Wireless Fidelity এর সংক্ষিপ্ত রূপ হচ্ছে Wi-Fi। ওয়াই-ফাই একটি তারবিহীন নেটওয়ার্কিং প্রযুক্তি যার মাধ্যমে বিভিন্ন পোর্টেবল বা বহনযোগ্য ডিভাইস (মোবাইল, ল্যাপটপ, কম্পিউটার) সহজে ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত করা যায়। Wi-Fi কাজ করে লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্কে (LAN)। Wi-Fi এর স্ট্যান্ডার্ড হচ্ছে IEEE 802.11। এর ফ্রিকুয়েন্সি ব্যান্ড 2.4GHZ থেকে 5.85GHZ পর্যন্ত হয়ে থাকে।

Note: ডাচ কম্পিউটার বিজ্ঞানী ভিক্টর ভিক হেয়েসকে Wi-Fi এর জনক বলা হয়।

WiMAX কী?

WiMAX এর পূর্ণরূপ হল Worldwide Interoperability for Microwave Access। WiMAX হল এমন এক ধরনের ওয়ারলেস প্রযুক্তি যার মাধ্যমে অধিক দূরত্ব পর্যন্ত তারবিহীন ইন্টারনেট সেবা প্রদান করা হয়। এর স্ট্যান্ডার্ড হচ্ছে IEEE 802.16.। WiMAX মূলত মেট্রপলিটন এরিয়ে নেটওয়ার্কে কাজ করে। WiMAX মূলত দুই অংশ থাকে। একটি হল বেস স্টেশন, যা WiMAX প্রভাইডাররা নেটওয়ার্ক কাভারেজ বৃদ্ধি করার জন্য ব্যবহার করে আর অপরটি হল নেটওয়ার্ক রিসিভার, যা গ্রাহকের ডিভাইসে লাগানো থাকে এবং WiMAX নেটওয়ার্ককে ইউজারের ব্যবহার উপযোগী করে তোলে।

সেল সিগনাল এনকোডিং (Cell signal Encoding) কী?

এনকোডিং পদ্ধতিতে বিভিন্ন ট্রান্সমিটার থেকে প্রেরিত সিগনাল গুলোকে পৃথক করার পদ্ধতিকে সেল সিগনাল এনকোডিং (Cell signal Encoding) বলে।

কম্পিউটার নেটওয়ার্ক (Computer Network) কী?

যখন কতগুলো কম্পিউটার কোনো মাধ্যম দ্বারা একে অপরের সাথে সংযুক্ত হয়ে তথ্যর আদান প্রদান ও রিসোর্স শেয়ার করতে পারে তখন সেটাকে কম্পিউটার নেটওয়ার্ক বলে। কম্পিউটার নেটওয়ার্ক হচ্ছে এমন একটি ব্যবস্থা যাতে দুই বা ততোধিক কম্পিউটার একসাথে যুক্ত থাকে। কম্পিউটার নেটওয়ার্ক ব্যবহারকারীরা ফাইল, প্রিন্টার ও অন্যান্য রিসোর্স ভাগাভাগি করে ব্যবহার করতে পারেন, একে অপরের কাছে বার্তা পাঠাতে পারেন এবং এক কম্পিউটারে বসে অন্য কম্পিউটারে প্রোগ্রাম চালাতে পারেন।

Computer-network

Note: পৃথিবীর সবচেয়ে বড় কম্পিউটার নেটওয়ার্ক হলো ইন্টারনেট।

পিয়ার টু পিয়ার নেটওয়ার্ক(Peer to Peer network) কী?

পিয়ার টু পিয়ার নেটওয়ার্ক

পিয়ার টু পিয়ার নেটওয়ার্কে প্রতিটি পিসি বা ওয়ার্কস্টেশন গুলো পরস্পরের সাথে সংযুক্ত থাকে এবং রিসোর্স শেয়ারিং এর ক্ষেত্রে সমান ভুমিকা পালন করে । এই নেটওয়ার্কে প্রতিটি পিসি একই সাথে সার্ভার ও ওয়ার্কস্টেশন হিসেবে কাজ করে। এই ধরনের নেটওয়ার্কে কোন ডেডিকেটেড সার্ভার থাকে না। তাই পিয়ার টু পিয়ার নেটওয়ার্কে সব পিসি সমান গূরুত্বের । এখানে প্রতিটি পিসির ব্যবহারকারী নিজে ঠিক করে তার কোন কোন রিসোর্স সে নেটওয়ার্কে শেয়ার করবে আর কোনটি করবে না। প্রতিটি পিসি তার নিরাপত্তা বিধানে সে নিজে দায়ী থাকবে।

 

ক্লায়েন্ট সার্ভার নেটওয়ার্ক(Client Server network) কী?

ক্লায়েন্ট সার্ভার নেটওয়ার্ক

কেন্দ্রিয়ভাবে ডেটা স্টোর করা, নেটওয়ার্কের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, এবং নেটওয়ার্ক চালানোর একটি উপযুক্ত নেটওয়ার্ক হলো ক্লায়েন্ট-সার্ভার নেটওয়ার্ক। এ ধরনের নেটওয়ার্কে একটি কম্পিউটারে রিসোর্স থাকে, আর নেটওয়ার্কের অন্যান্য কম্পিউটার সেসব রিসোর্স ব্যবহার করে। যে কম্পিউটার রিসোর্স শেয়ার করে সেটি হচ্ছে সার্ভার, আর যেসব কম্পিউটার সেই রিসোর্স ব্যবহার করে তারা হচ্ছে ক্লায়েন্ট। নেটওয়ার্কের সমস্ত রিসোর্স সার্ভারে জমা থাকায় কেন্দ্র থেকে রিসোর্স ম্যানেজ করা যায়। সব ইউজার একই সার্ভারে লগ-ইন করে এবং সার্ভারের সিকিউরিটি পলিসিমেনে চলে বলে নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়। ক্লায়েন্ট-সার্ভার নেটওয়ার্ককে সার্ভার বেজ নেটওয়ার্কও বলা হয়।

হাইব্রীড নেটওয়ার্ক ( Hybrid Network) কী?

হাইব্রীড নেটওয়ার্ক

একাধিক নেটওয়ার্ক যেমন-পিয়ার-টু-পিয়ার এবং ক্লায়েন্ট সার্ভার নেটওয়ার্কের সমন্বয়ে গঠিত নেটওয়ার্কই হল হাইব্রিড বা মিশ্র নেটওয়ার্ক।

Networking Devices কী?

কম্পিউটার নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার জন্য নেটওয়ার্ক মিডিয়া এবং কানেক্টরই যথেষ্ট নয়। মিডিয়া এবং কানেক্টরের সাহায্যে গড়ে তোলা নেটওয়ার্ককে কার্যকর করে তোলার জন্য আরও কিছু নেটওয়ার্ক ডিভাইস প্রয়োজন। যেমনঃ Modem, Network Interface Card (NIC), Repeater, Hub, Switch, Router, Gateway, Bridge।

LAN কার্ড/ NIC কার্ড/ Network Interface Card কী?

কোন কম্পিউটারকে নেটওয়ার্ক মিডিয়ার সাথে সংযোগ দেওয়ার জন্য একটি বিশেষ ইন্টারফেসের দরকার পড়ে। এই ইন্টারফেসের কাজটি করে নেটওয়ার্ক ইন্টারফেস কার্ড বা NIC কার্ড এটি নেটওয়ার্ক এডাপটর বা ল্যান কার্ড নামেও পরিচিত। একটি ডিভাইস আরকেটি ডিভাইসের সাথে যোগাযোগ করার প্রথম ধাপটি শুরু হয় নটেওর্য়াক ইন্টারফস র্কাড থেকে।

মডেম (Modem) কী?

মডেম একটি ডেটা কমিউনিকেশন ডিভাইস যা ডেটাকে এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে মাধ্যমের সাহায্যে পৌঁছে দেয়। Modem শব্দটি Modulator ও De-modulator এর সংক্ষিপ্ত রুপ। মডুলেটর ডিজিটাল সিগনালকে এনালগ সিগনালে এবং ডিমডুলেটর এনালগ সিগনালকে ডিজিটাল সিগনালে রুপান্তর করে। সাধারনত কম্পিউটারে ইন্টারনেট সংযোগ স্থাপনের জন্য মডেম ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

রিপিটার (Repeater) কী?

ডেটা সিগনাল নেটওয়ার্ক মিডিয়ার মধ্যে দিয়ে ট্রান্সমিশন হয়ার সময় একটি নির্দিষ্ট দূরত্ব অতিক্রম করার পর সেটি আস্তে আস্তে দূর্বল হতে থাকে। তখন সিগনালকে অ্যামপ্লিফাই বা রিজেনারেট করে গন্তব্য পর্যন্ত পৌছাতে হয়। এর জন্য যেই ডিভাইসটি প্রয়োজন হয় সেটি হলো রিপিটার। রিপিটার এর কাজ হলো দূর্বল সিগনালকে শক্তিসালী করে গন্তব্যে পৌছে দেওয়া।

হাব(HUB) কী?

হাব(HUB) এমন এক ধরনের নেটওয়ার্কিং ডিভাইস যা নেটওয়ার্কের কম্পিউটার গুলোকে একটি নির্দিষ্ট পয়েন্টে এনে সংযুক্ত করে। অর্থাৎ হাবের মাধ্যমে নেটওয়ার্কের কম্পিউটার গুলো একে অপরের সাথে সংযুক্ত থাকে। হাব এর মধ্যে অনেকগুলো পোর্ট থাকে। এর পোর্টের সংখ্যার উপর নির্ভর করে Network এ কতগুলো কম্পিউটার সংযোগ দেওয়া যাবে। হাবের অন্তরভূক্ত কোনো কম্পিউটার থেকে ডেটা পাঠালে হাব সেটিকে তার প্রতিটি পোর্টে সংযুক্ত সকল কম্পিউটারে পাঠিয়ে দেয়। অর্থাৎ হাব নেটওয়ার্কের সিগনালকে ব্রডকাষ্ট করে। হাবের প্রতিটি পোর্ট অবার রিপিটার হিসেবেও কাজ করে।

সুইচ (Switch) কী?

সুইচ একটি নেটওয়ার্ক কানেক্টিং ডিভাইস। সুইচ এর কাজ হচ্ছে নেটওয়ার্কভূক্ত কম্পিউটার সমূহকে একটি নির্দিষ্ট পয়েন্টে এনে সংযুক্ত করা। সুইচ সাধারনত ৮/১৬/৩২ পোর্ট বিশিষ্ট হয়। প্রতিটি পোর্টের মাধ্যমে একটি করে কম্পিউটার নেটওয়ার্কের সাথে সংযুক্ত হয়। নেটওয়ার্ক অন্তর্ভূক্ত কোন কম্পিউটার থেকে কোন ডেটা প্রেরণ করলে সেই ডেটা প্রথমে সুইচের কাছে যায় পরে সুইচ সেই ডেটা প্রাপক কম্পিউটারের সুনির্দিষ্ট পোর্টটিতে পাঠিয়ে দেয়।

গেটওয়ে (Gateway) কী?

ভিন্ন ভিন্ন প্রোটকলের একাধিক নেটওয়ার্কে সংযুক্ত করার জন্য যে ডিভাইসটি প্রয়োজন হয় সেটি হলো গেটওয়ে । গেটওয়ে প্রোটকল ট্রান্সেলেশনের সুবিধা দিয়ে থাকে।

রাউটার (Router) কী?

এক নেটওয়ার্ক থেকে আরেক নেটওয়ার্কে ডেটা পাঠানোর পদ্ধতিকে বলে রাউটিং। যে ডিভাইস রাউটিং এর কাজে ব্যবহৃত হয় তাকে বলে রাউটার। একই প্রোটকলরে ভিন্ন ভিন্ন নেটওয়ার্ককে যুক্ত করার জন্য এ ডিভাইস ব্যবহার করা হয়। এটি LAN, MAN এবং WAN তিন ধরনের নেটওয়ার্কেই কাজ করে। রাউটারের মধ্যে ইন্টেলিজেন্স বা বুদ্ধিমত্তা দেওয়া থাকে যা এক নেটওয়ার্ক থেকে অন্য নেটওয়ার্কে ডেটা কমিউনিকেশনের ক্ষেত্রে সংক্ষিপ্ততম পথ খুঁজে বের করে। ভিন্ন ধরনের টপোলজির নেটওয়ার্ককে যুক্ত করার জন্য রাউটার ব্যবহৃত হতে পারে।

ব্রিজ (Bridge) কী?

ব্রিজ একটি নেটওয়ার্কিং ডিভাইস যা একাধিক নেটওর্য়াককে একত্রে সংযুক্ত করে বৃহৎ নেটওর্য়াক তৈরি করে। এর র্কায পদ্ধতি হাব ও সুইচের মতই। কিন্তু হাব ও সুইচ একই নেটওর্য়াকের একাধিক নোডকে সংযুক্ত করে আর ব্রিজ ছোট ছোট নেটওর্য়াককে সংযুক্ত করে।

প্রটোকল (Protocol) কী?

নেটওয়ার্কভূক্ত কম্পিউটারগুলোর ডাটা আদান-প্রদানের পদ্ধতি যে প্রক্রিয়ায় নিয়ন্ত্রণ করা হয় তাকে বলা হয় প্রোটকল। সকল নেটওয়ার্কের অপারেটিং সিস্টেম কিংবা বিভিন্ন হার্ডওয়ার সামগ্রী একই ধরনের হয় না। অপারেটিং সিস্টেম কিংবা হার্ডওয়ারের ভিন্নতা থাকা সত্ত্বেও যে কোন দুটি কম্পিউটারের মধ্যে ডাটা আদান-প্রদান সম্ভব হয় প্রোটোকলের মাধ্যমে। সহজ কথায় প্রোটোকল হচ্ছে ডাটা ট্রান্সমিশনের সুনির্দিষ্ট রীতিনীতি। নীচে বহুল ব্যবহৃত কয়েকটি প্রোটোকলের নাম উল্লখে করা হলোঃ TCP/IP, FTP, Net Bios, Net BEUI, Apple Talk, Ether NET.

নেটওয়ার্ক টপোলজি (Network Topology) কাকে বলে?

কম্পিউটার নেটওয়ার্কে বিভিন্ন নেটওয়ার্কিং ডিভাইস ও কম্পিউটারসমূহ একটি অন্যটির সাথে সংযুক্ত থাকার পদ্ধতিকে টপোলজি বলে। নেটওয়ার্কে কম্পিউটারগুলো কিভাবে সংযুক্ত আছে, ক্যাবল কিভাবে একটি আরেকটির সাথে যুক্ত আছে, এটিই টপোলজির মূল বিষয়।

রিংগিং (Ringing) কী?

বাস টপোলজির প্রধান ক্যাবলের দুই পাশে দুইটি অনমুক্ত প্রান্ত থাকে। প্যাসিভ টপোলজী হওয়ায়  বাস টপোলজিতে নেটওয়ার্ক সিগনাল এই প্রধান ক্যাবলের মধ্যে দিয়ে অবাধে এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে চলাচল করতে পারে। যার ফলে অনমুক্ত প্রান্তে টারমিনেটর ব্যবহার না করা হলে নেটওয়ার্ক সিগনাল এই অনমুক্ত প্রান্তে বাধা পেয়ে পিছন দিকে ফিরে আসে। নেটওয়ার্ক সিগনাল এর এমন ফিরে আসাকে রিংগি (Ringing)বলে।

ক্লাউড কম্পিউটিং (Cloud Computing) কী?

ক্লাউড কম্পিউটিং হল সেই প্রযুক্তি যেখানে ইন্টারনেটের মাধ্যমে ব্যবহারকারীর চাহিদা অনুযায়ী যেকোন ধরনের কম্পিউটিং সেবা প্রদান করা হয়। যেকোনো ব্যবহারকারী বা প্রতিষ্ঠান নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে কম্পিউটার সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান থেকে যে কোনো ধরনের সেবা গ্রহন করতে পারবে এবং যতটুকু সেবা গ্রহন করবে ঠিক ততটুকু সেবার জন্য মূল্য দেবে। অথাৎ ইন্টারেটের মাধ্যেমে সবচেয়ে কম খরচে সর্বোচ্চ সুবিধা ভোগ করাকেই ক্লাউড কম্পিউটিং (Cloud Computing) বলে।

কম্পিউটার বাস (Computer Bus) কী?

কম্পিউটার বাস হচ্ছে বিশেষ ধরনের ক্যাবল বা তার যার মধ্যে দিয়ে কম্পিউটারের অভ্যন্তরীন সিগনাল গুলো এক অংশ থেকে আরেক অংশে আদান প্রাদান করা হয়। অর্থাৎ কম্পিউটার যেসব ডিভাইসের সমন্বয়ে তৈরি (যেমন মাইক্রোপ্রসেসর, ইনপুট ডিভাইস, আউটপুট ডিভাইস, মেমোরি অংশ ইত্যাদি) তাদের মধ্যে ডিজিটাল তথ্য (০ ও ১) চলাচলের জন্য যে মাধ্যম ব্যবহার করা হয় তাকেই বাস বলে।

Note: বাসের গতি মাপা হয় মেগাহার্টজে (MHz)। বাসের গতি যত বেশি হবে কম্পিউটারের কাজের গতিও তত বেশি হবে। কম্পিউটারের সংগঠনে দু’ধরনের বাস আছে। যথা — ১। সিস্টেম বাস (System Bus)  ২। এক্সপানশন বাস (Expansion Bus)

প্রথম অধ্যায়ঃ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিঃ বিশ্ব ও বাংলাদেশ প্রেক্ষিত

More
articles

Need Help?

I’m Here To Assist You

Feel free to contact me, and I will be more than happy to answer all of your questions.